বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, মানবিক করিডর ইস্যুর মতো সংবেদনশীল বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসা উচিত জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত জাতীয় সংসদ থেকে। তিনি বলেন, এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে জনগণের সম্মতি ছাড়া অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের একতরফা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
আজ ১ মে মহান মে দিবস উপলক্ষে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল আয়োজিত শ্রমিক সমাবেশে যুক্ত হয়ে তারেক রহমান এসব কথা বলেন। যুক্তরাজ্য থেকে ভার্চুয়ালি বক্তব্য দেন তিনি।
মিয়ানমারের রাখাইনে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে সহায়তা পৌঁছাতে বাংলাদেশ ভূখণ্ড ব্যবহার করে ‘মানবিক করিডর’ স্থাপন নিয়ে চলমান আলোচনা প্রসঙ্গে তারেক রহমান বলেন, “দেশের জনগণ মনে করে, এমন সিদ্ধান্ত জনগণের ম্যান্ডেট ছাড়া নেওয়া যায় না। এই সিদ্ধান্ত নির্বাচিত জাতীয় সংসদ থেকেই আসা উচিত।”
তিনি অভিযোগ করে বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এই বিষয়ে কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করেনি, এমনকি জনগণকেও কিছু জানানো হয়নি। এটি দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত একটি স্পর্শকাতর ইস্যু। তাই জনগণের ইচ্ছা ও ম্যান্ডেট ছাড়া এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া যুক্তিযুক্ত নয়।
তারেক রহমান আরও বলেন, “বর্তমানে সংস্কারের নামে যে শোরগোল চলছে, সেখানে শ্রমিক ও প্রান্তিক মানুষের কণ্ঠস্বর অনুপস্থিত। কৃষক ও শ্রমিকেরা দেশের মূল চালিকাশক্তি, কিন্তু তাঁদের প্রতিনিধি কোথায়?”
তিনি জনগণের অধিকার আদায়ের জন্য একটি নির্বাচিত সরকার গঠনের গুরুত্ব তুলে ধরেন এবং বলেন, “জনগণের কথা শোনে একমাত্র জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকারই।” বিএনপির চলমান সংস্কার কর্মসূচি সম্পর্কে তিনি বলেন, “বিএনপি বর্তমানে জনগণের সঙ্গে সংলাপের মাধ্যমে বাস্তবভিত্তিক সংস্কার পরিকল্পনা করছে এবং তা বাস্তবায়নের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গেও আলোচনা চলছে।”
সমাবেশে তারেক রহমান আরও বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের একটি অংশ সংস্কার ও নির্বাচনকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে বিরোধী রাজনৈতিক শক্তিগুলোর মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করতে চায়।
তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানান, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের একটি সুনির্দিষ্ট রূপরেখা ও কর্মপরিকল্পনা জনসমক্ষে প্রকাশ করতে, যাতে করে জনগণের মধ্যে বিদ্যমান সন্দেহ ও সংশয় দূর হয়।
সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খানসহ নেতৃবৃন্দ। সভাপতিত্ব করেন শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন এবং সঞ্চালনা করেন প্রচার সম্পাদক মঞ্জুরুল ইসলাম। সমাবেশে ঢাকাসহ আশপাশের জেলা থেকেও বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।