৫ তারিখ দুপুরের পর ‘লীগের নেতা-কর্মীরা বিজয় মিছিলে হামলা করছে’ – এটা কি কোনভাবে বিশ্বাসযোগ্য? যেখানে কেন্দ্র থেকে তৃণমুল নেতৃত্ব ছিলো পুরাই স্থবির এবং নেতা-কর্মীরা নিজেরাই নিজেদের জীবন রক্ষার শংকায় ছিলো, সেখানে তারা কিভাবে হামলা করে ??
৬ই জুন থেকে ৫ই আগষ্ট – এই সময়কালকে কেউ বলে বিপ্লব, কেউ বলে অভ্যুত্থান। কিন্তু দিন গড়াতেই এখন অনেকের কাছেই স্পষ্ট প্রমানিত এই জুলাই – আগষ্টের ঘটনা ছিলো দেশী-বিদেশী সম্মিলিত ষড়যন্ত্র, পিউর মেটিকিউলাস প্ল্যান।
এই সময়ের মধ্যে আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী- সমর্থক ব্যতীত যারা মারা গেছে তাদের ‘জুলাই শহীদ’ এবং যারা আহত তাদের ‘জুলাই যোদ্ধা’ স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে সরকারী প্রজ্ঞাপন ঘোষনা করে।
৫ই আগষ্টের আগের রাত পর্যন্ত প্রত্যেকটা দিনই সুপরিকল্পিতভাবে গুজব রটানো হয়েছে, সারা দেশে প্রতিদিন গনহত্যা চালিয়ে হাজার হাজার ছাত্রকে হত্যা করা হয়েছে, গুম করা হয়েছে। এমনকি সর্বোচ্চ পর্যায়ের অনেক শিক্ষিত-মেধাবীরাও এই গুজব বিশ্বাস করেছে এবং ছড়িয়েছে।
৫ই আগষ্টের পর নিহতের, গুমের সেই সংখ্যা প্রথমে ৪ হাজার দাবী করা হয়। পরবর্তীতে ক্রমান্বয়ে কমে সে সংখ্যা ৩ হাজার, ২ হাজার হয়ে সর্বশেষ ১ হাজার ৪ শত জনে এসে স্থির হয়। কিন্তু গালগল্পে ভরা কল্পকাহিনীতে ১ হাজার ৪ শত জন ছাত্র-জনতা নিহত হয়েছে দাবী করলেও সরকারী প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে তথাকথিত শহীদ গেজেটে প্রকাশিত হয়েছে ৮৩৪ জনের নাম। তাদের দাবী ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য এই ৮৩৪ জনকে আওয়ামী লীগ সরকারের নিয়ন্ত্রনাধীন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও দলীয় নেতা-কর্মীরা আন্দোলনরত অবস্থায় হত্যা করেছে। ঐ একই সময়কালে অর্থাৎ জুলাই থেকে প্রজ্ঞাপন জারির আগে পর্যন্ত নৃশংস ভাবে নিহত হওয়া কোনো আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মী-সমর্থকদের তালিকা সরকার করেনি। এমনকি দায়িত্বরত প্রায় ৩ হাজার পুলিশ, আনসার, র্যাব বা সরকারের নিয়ন্ত্রনাধীন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিহতদের কারোরই কোন তালিকা করা হয়নি। যদিও জাতিসংঘ তাদের একপেশে তদন্ত শেষে স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছিলো, ১লা জুলাই থেকে ১৫ই আগষ্ট পর্যন্ত সারাদেশে নিহত হওয়া ১ হাজার ৪ শত জনের মধ্যে ছাত্র, জনতা, পথচারী, পুলিশ, আনসার, র্যাব এবং আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী, সমর্থকরাও অন্তর্ভুক্ত। জাতিসংঘর সেই প্রতিবেদনের তথ্য পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতা- কর্মীদের উপর হওয়া গনহত্যার দাবীকে ভিত্তি প্রদান করে।
এই ‘শহীদ গেজেট’ প্রকাশ করতে শুধুমাত্র আন্দোলনে নিহতদেরই নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে সেটা মোটেই সত্য নয়। ভূয়া শহীদদের নাম অন্তর্ভুক্ত করে গেজেটে প্রকাশিত তালিকাটা দীর্ঘ করা হয়েছে সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে।
গত পর্বে আপনাদের সামনে গেজেটভুক্ত এমন কিছু নাম উপস্থাপন করেছি, যাদের কারো মৃত্যু আন্দোলন সংশ্লিষ্টতায় হয়নি। হয়েছে বাইক দুর্ঘটনায়, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে, সম্পত্তি নিয়ে কোন্দলে, হার্ট এ্যাটাকে, হিটস্ট্রোকে, কিডনি রোগে, জেল ভেঙ্গে পালাতে যেয়ে, জেলে হামলা করতে গিয়ে, নিজেরই অস্ত্রের গুলিতে – এমন সব নানা কারণে।
৫ই আগষ্ট দুপুরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশত্যাগের পর থেকেই সারাদেশে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের হত্যা, এমপি-মন্ত্রী-নেতা- কর্মীদের বাসভবন ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, লুটপাট, ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ করে, হত্যা, সন্ত্রাস নৈরাজ্য আর জ্বালাও-পোড়াও এর এক চরম ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়। সেই সন্ত্রাসে, লুটপাটে নিজেদের লাগানো আত্মঘাতী আগুনে পুড়ে নিহত হয়েও অনেকেই শহীদি মর্যাদায় ‘জুলাই শহীদ গেজেট’ এ তালিকাভুক্ত হয়েছে !!
আজকের এই পোস্টে এরকম ঘটনার মধ্যে শুধুমাত্র যে ঘটনাগুলিতে একাধিক দুর্বৃত্ত অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা গেছে এমন ৩টি ঘটনা উল্লেখ করবো এবং তা গেজেটের ক্রমিক নাম্বার অনুযায়ী না, এলাকা ও ঘটনা অনুসারে।
প্রথমেই নাটোর-২ আসনের সংসদ সসস্য শফিকুল ইসলাম শিমুলের বাড়ির ঘটনা।
৫ই আগষ্ট দুপুরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ত্যাগের পর বিকালে শফিকুল ইসলাম শিমুলের বাসভবন ‘জান্নাতি প্যালেস’-এ হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে লুটপাট শুরু করে তথাকথিত আন্দোলনকারীরা। এই হামলার আগেই জীবনাশঙ্কায় শিমুল ও তার পরিবার ‘জান্নাতি প্যালেস’ ত্যাগ করে অন্যত্র আশ্রয় নেন। আন্দোলনে অংশ নেয়া দুর্বৃত্তরা শফিকুল ইসলাম শিমুলের বাসভবন, তার ছোট ভাইয়ের একটি পাঁচতলা বাড়ি ও পুরোনো পৈত্রিক বাড়িতেও হামলা চালিয়ে লুটপাট শুরু করে। ঐসময়ে লুটপাটের উদ্দেশ্যে দুর্বৃত্তদের একটা অংশ ‘জান্নাতি প্যালেস’ এ ঢুকে যায় আর অন্যরা ভবনে অগ্নিসংযোগ করে দেয়। আগুনের প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় লুটপাট করতে যাওয়া দুর্বৃত্তরা ‘জান্নাতি প্যালেস’ থেকে আর বের হতে পারে নাই এবং দমবন্ধ হয়ে মারা যায়। পরদিন সকালে সেনাবাহিনীর উপস্থিতিতে ফায়ার সার্ভিস ‘জান্নাতী প্যালেস’ এ গিয়ে বাড়ির ছাদে একটি, তৃতীয় তলার বেলকনিতে একটি ও দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষে দুটি মৃতদেহ খুঁজে পায়। এরপর লাশগুলো শনাক্ত করার পর নিহতদের স্বজনেরা নিয়ে যায়।
( https://www.ittefaq.com.bd/695534/লুটপাটের-উদ্দেশ্যে-এমপি-শিমুলের-বাড়িতে-প্রবেশ )
এই ঘটনায় নিহতরা হলো শাওন খান সিয়াম, মিকদাদ হোসেন খান আকিব, শরিফুল ইসলাম মোহন ও ইসাসিন আলী।
আন্দোলন সমাপ্ত হওয়ার পরে লুটপাট করতে যেয়ে নিজেদের আগুনে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যাওয়ার পরও তথাকথিত শহীদ গেজেটে এই চারজনের নামই অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
* গেজেটের ২৮৮ নাম্বারে রয়েছে শহীদ (!) শাওন খান সিয়ামের নাম,
* ২৮৯ নাম্বারে শহীদ (!) মিকদাদ হোসেন খান আকিব,
* ২৯০ নাম্বারে শহীদ (!) মর্যাদায় তালিকাভুক্ত হয়েছে শরিফুল ইসলাম মোহন এবং
* ২৯১ নাম্বারের শহীদ (!) হলো ইয়াসিন আলী।
শুধু শহীদি মর্যাদায় গেজেটভুক্ত হয়েই শেষ হয়নি, পরবর্তীতে নিহত মিকদাদ হোসাইন খান আকিবের বাবা স্থানীয় জামায়াত নেতা দেলোয়ার হোসেন খান ১৭ই সেপ্টেম্বর শেখ হাসিনা ও সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুলসহ আওয়ামী লীগের ২৪ জন নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখ ও অনেককে অজ্ঞাতনামা আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।
একইদিন নিহত শরিফুল ইসলাম মোহন এর ভাই সাবেক ছাত্রশিবির নেতা এস এম সেলিম মাসুমও শেখ হাসিনা ও সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম সহ আওয়ামী লীগের ২৩ জন নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখ ও অনেককে অজ্ঞাতনামা আসামি করে আরেকটি হত্যা মামলা দায়ের করে।
দুটি এজাহারেই সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হুকুমের আসামি করা হয়েছে!
( https://www.dhakapost.com/country/307692 )
একই ঘটনায় নিহত ইয়াসিনের বাবা ফজের আলী ১৮ই আগষ্ট দুপুরে নাটোর সদর থানায় শেখ হাসিনা ও সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুলসহ ১১১ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। ( https://bangla.thedailystar.net/news/bangladesh/news-606686 )
দ্বিতীয় ঘটনাটি প্রায় একই রকমের। একইদিনে অর্থাৎ ৫ই আগষ্ট বিকালে সারাদেশের মতো লালমনিরহাট জেলা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ও সংসদ সদস্যদের বাসা এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা-ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ লুটপাট শুরু করে দুর্বৃত্তরা। ঐ সময়ে কালীবাড়ি এলাকায় লালমনিরহাট জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন সুমন খানের জনশূন্য বাসভবনেও হামলা ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে একদল উশৃঙ্খল দুর্বৃত্ত। এই তান্ডব করতে গিয়ে নিজেদের সহযোগীদের ধরানো আগুনে বাড়ীর ভেতরে আটকা পড়ে অগ্নিদগ্ধ হয়ে নিহত হয় ৬জন। তারা হলো লালমনিরহাট জেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি জাহিদুল ইসলাম খোকন মিয়ার ছেলে আল শাহ রিয়াদ, জোবায়ের হোসেন, শাহরিয়ার আল আফরোজ শ্রাবণ, জাহিদুর রহমান জনি, রাজিব উল করিম সরকার ও রাদীফ হোসেন রুশো। পরে দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে সেনাবাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতিতে লালমনিরহাট ফায়ার সার্ভিসের একটি দল সাখাওয়াত হোসেন সুমনের পুড়ে যাওয়া বাড়িটি তল্লাশি চালিয়ে ৬ শিক্ষার্থীর পোড়া লাশ উদ্ধার করে। (https://www.kalbela.com/country-news/109351)
তথাকথিত আন্দোলন শেষে সুমন খানের ফাঁকা বাসায় নিজেদের আগুনে অগ্নিদগ্ধ হয়ে আত্মঘাতি ৬ জনেরই নাম অন্তর্ভুক্ত হয়েছে শহীদ গেজেটে !!
* শহীদ (!) গেজেটের ৭১৩ নাম্বারে আছে আল শাহ রিয়াদ (তন্ময়),
* ৭১৪ নাম্বারে মোঃ জোবায়ের হোসেন,
* ৭১৫ নাম্বারে মোঃ শাহরিয়ার আল আফরোজ শ্রাবণ,
* ৭২৯ নাম্বারে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে মো: জাহিদুর রহমান (জনি),
* ৭৮২ নাম্বারে শহীদি (!) মর্যাদায় আসীন হয়েছে মোঃ রাজিব উল করিম সরকার এবং
* ৭৮৩ নাম্বারে তালিকাভুক্ত শহীদ (!) মোঃ রাদীফ হোসেন রুশো।
এই ঘটনায় অবাক করার বিষয় হলো, অগ্নিদগ্ধ এই ৬ জনের লাশ উদ্ধারের ঘটনায় বাড়ীর মালিক সাখাওয়াত হোসেন সুমন খান সহ আওয়ামী লীগের ৩৮ জন নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৩০/৩৫ জনকে আসামি করে লালমনিরহাট সদর থানায় গত ২৭শে মে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে জনৈক আরমান আরিফ !!
( https://www.dhakapost.com/country/368647 )
** তৃতীয় ঘটনাটি ঠাকুরগাঁও এর।
৫ই আগষ্ট সন্ধ্যায় একদল দুর্বৃত্ত ঠাকুরগাঁও রোড এলাকায় বালিয়াডাঙ্গী মোড়ে বেশ কয়েকটি দোকানপাটে হামলা করে ভাঙচুর ও লুটপাট শেষে অগ্নিসংযোগ করে। এসময় একটি দোকানের ভিতরে থাকা গ্যাসের সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়ে হামলাকারীদের মধ্যে ৬ জন গুরুতরভাবে দগ্ধ হয়। হাসপাতাল নেয়ার পথে মারা যায় পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন ও শাহান নামের একজন। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় রাকিবুল হাসান রকি ও রায়হানুল নামের দু’জন। (https://www.unb.com.bd/bangla/category/সারাদেশ/ঠাকুরগাঁওয়ে-দুর্বৃত্তদের-আগুনে-গ্যাস-সিলিন্ডার-বিষ্ফোরণ,-নিহত-২/92562)
অবাক করা বিষয় হলো, হামলা লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করতে গিয়ে নিজেদের আগুনে অগ্নিদগ্ধ হয়ে নিহত এই ৪ জনই শহীদের মর্যাদা লাভ করেছে, সবার নামই অন্তর্ভুক্ত হয়েছে শহীদ গেজেটে !!!
* শহীদ গেজেটে ৮০২ নাম্বারে স্থান পেয়েছে মোঃ সাহান পারভেজ এর নাম,
* ৮০৩ নাম্বারে রয়েছে মোঃ রাকিবুল হাসান এর নাম,
* ৮০৪ নাম্বারে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে মোঃ রায়হানুল হাসান এবং
* ৮০৭ নাম্বারের তালিকাভুক্ত শহীদ (!) হলো মো: আল মামুন।
পরবর্তীতে অগ্নিদগ্ধ হয়ে নিহত রাকিবুল হাসান রকি’র বাবা জাকির হোসেন ২১শে আগষ্ট আওয়ামী লীগের ৭৭ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ১৫০/২০০ জনকে আসামী করে ঠাকুরগাঁও সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।
( https://bartabazar.com/news/68232/ )
একই ঘটনায় নিহত রায়হানের পিতা জামায়াত নেতা ফজলে আলম ২রা সেপ্টেম্বর আওয়ামী লীগের ৯১ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা ১৫০/ ২০০ জনকে আসামী করে ঠাকুরগাঁওয়ের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতে একটি অভিযোগ দায়ের করেছে! পরবর্তীতে অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন আদালত!
( https://www.prothomalo.com/bangladesh/district/fd1fqk5rcc )
৫ই আগষ্ট বেলা প্রায় ১২টার দিকে সেনাপ্রধান জাতির উদ্দেশ্যে ভাষন দিবে শেনার পর থেকেই কেন্দ্র থেকে তৃণমুল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের প্রায় সকল নেতা-কর্মীরাই পট পরিবর্তের আশংকায় হোক কিংবা প্রানভয়ে হোক – সবাই রাজপথ ছেড়ে দেয়, তাই ৫ তারিখ দুপুরের পর থেকে রাজপথের কোথাও লীগ সংশ্লিষ্ট সক্রিয় কেউ ছিলো না এবং প্রধানমন্ত্রী দেশত্যাগের পর সারাদেশ জুড়ে মব সন্ত্রাসসহ পারিপার্শ্বিক উন্মত্ততা ও চরম নৈরাজ্যকর অবস্থা দেখে সন্ধ্যার পর থেকে প্রান রক্ষার্থে তারা সবাই আত্মগোপনে চলে যায়।
৫ তারিখ দুপুরের পর ‘লীগের নেতা-কর্মীরা বিজয় মিছিলে হামলা করছে’ – এটা কি কোনভাবে বিশ্বাসযোগ্য?
যেখানে কেন্দ্র থেকে তৃণমুল নেতৃত্ব ছিলো পুরাই স্থবির এবং নেতা-কর্মীরা নিজেরাই নিজেদের জীবন রক্ষার শংকায় ছিলো, সেখানে তারা কিভাবে হামলা করে ??
লীগের নেতা-কর্মীরা কোথাও হামলা করেছে – এই দাবী ১০০% ভূয়া কথা। এই দাবী করা হয় জাস্ট ভূয়া মামলার এজাহারে লেখার জন্য এবং ৫ তারিখে দুপুরের পর থেকে সংঘটিত প্রতিটি ঘটনার বিপরীতে দায়ের করা মামলায় লিখা ছিলো “বিজয় মিছিল করার সময় হামলা”। এই উদ্ভট প্রচারনার আরেকটা কারন হলো গেজেটে অন্তর্ভুক্ত ভূয়া শহীদদের হামলা, হত্যা, লুটপাট, ভাংচুর অগ্নিসংযোগ সহ যাবতীয় অপকর্ম ঢেকে দেওয়ার অপকৌশল।
যেখানে উপরে উল্লখিত ৩টি ঘটনাতেই যাদের বাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা করে লুট ও অগ্নিসংযোগ করা হলো তারা কেউই সেই সময়ে বাড়িতে বা দোকানে ছিলেন না। তাহলে কিভাবে এই মামলাগুলিতে তাদেরকে আসামী করা হলো ?প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তো দুপুরেই দেশত্যাগ করেছেন, তাহলে তাকে আসামী করা হলো কোন যুক্তিতে ??এসব ভিত্তিহীন মিথ্যা মামলা গ্রহন করা হলো কোন উদ্দেশ্যে ???এর দ্বারা তো এটাই প্রমান হয়, সবগুলি মামলাই ভিত্তিহীন, মিথ্যা, বানোয়াট এবং প্রত্যেকটি মামলাই অসৎ উদ্দেশ্যে সুপরিকল্পিতভাবেই করা হয়েছে।
* * তৃতীয় পর্ব আসবে শীঘ্রই, সেই পর্বেও থাকবে তথাকথিত শহীদ গেজেটে অন্তর্ভুক্ত শহীদদের বিষয়ে আরো চমকপ্রদ কিছু তথ্য।